Import unapproved medicine into Bangladesh

Importing medicines into Bangladesh

Bangladesh View English version

বাংলাদেশে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য অনুমোদনহীন বা অনুপস্থিত জীবনরক্ষাকারী ওষুধ আমদানি করার প্রয়োজনীয়তা

প্রস্তাবনা

বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় ওষুধের প্রাপ্যতা একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য বিষয়। সরকার নিরাপদ ও কার্যকর ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকলেও কখনও কখনও কিছু জীবনরক্ষাকারী ওষুধ দেশে অনুমোদনহীন বা অনুপস্থিত থাকতে পারে। ১৯৮২ সালের ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এই ধরনের ওষুধ আমদানির একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি রয়েছে। এই লিখাটি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশে অনুমোদনহীন বা অনুপস্থিত জীবনরক্ষাকারী ওষুধ আমদানির প্রয়োজনীয়তা ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করে।

আইনি কাঠামো

ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ এর সংক্ষিপ্তসার

১৯৮২ সালের ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ হলো বাংলাদেশের ওষুধের উৎপাদন, আমদানি, বিতরণ এবং বিক্রয় নিয়ন্ত্রণের প্রধান আইন। এই অধ্যাদেশের মূল উদ্দেশ্য হলো জনগণের জন্য নিরাপদ, কার্যকর ও মানসম্পন্ন ওষুধের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা। এটি অনুমোদনহীন বা নিবন্ধনহীন ওষুধের আমদানি ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করে, তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু ছাড় প্রদান করা হয়।

নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ

মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) হলো বাংলাদেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ডিজিডিএ ওষুধ আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করে এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে অনুমোদনহীন বা নিবন্ধনহীন ওষুধ আমদানির অনুমতি প্রদান করে।

অনুমোদনহীন জীবনরক্ষাকারী ওষুধ আমদানির প্রয়োজনীয়তা

যোগ্যতার মানদণ্ড

নিম্নলিখিত মানদণ্ড পূরণকারী ব্যক্তিরা ওষুধ আমদানির আবেদন করতে পারবেন:

  • ওষুধটি জীবন বিপন্নকারী অবস্থার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয়।
  • বাংলাদেশে কোনো বিকল্প অনুমোদিত ওষুধ নেই।
  • আমদানিটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এবং বিক্রয় বা বিতরণের উদ্দেশ্যে নয়।

প্রয়োজনীয় নথিপত্র

চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ও রিপোর্ট

একটি নিবন্ধিত চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন আবশ্যক। এতে উল্লেখ থাকতে হবে:

  • রোগীর পূর্ণ নাম ও পরিচয়।
  • রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য ওষুধের প্রয়োজনীয়তা।
  • ওষুধের নির্দিষ্ট নাম, ডোজ ও ব্যবহারের বিবরণ।
  • দেশে কোনও বিকল্প চিকিৎসা নেই এমন ঘোষণা।

প্রেসক্রিপশনের সাথে একটি বিস্তারিত চিকিৎসা প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র

আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের কপি প্রদান করতে হবে।

ওষুধের বিবরণ

ওষুধ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হবে:

  • জেনেরিক ও ব্র্যান্ড নাম।
  • উৎপাদনকারীর নাম ও যোগাযোগের ঠিকানা।
  • উৎপত্তির দেশ।
  • আমদানির পরিমাণ।
  • ব্যাচ নম্বর ও মেয়াদোত্তীর্ণতার তারিখ (যদি থাকে)।

আবেদন প্রক্রিয়া

ধাপ ১: আবেদন প্রস্তুতি

প্রয়োজনীয় সকল নথি প্রস্তুত করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে সবকিছু স্পষ্ট ও পাঠযোগ্য।

ধাপ ২: ডিজিডিএ-তে আবেদন জমা

আবেদন নিম্নলিখিত উপায়ে জমা দেওয়া যেতে পারে:

  • সরাসরি ডিজিডিএ কার্যালয়ে।
  • পোস্টাল মেইলের মাধ্যমে ডিজিডিএ-র অফিসিয়াল ঠিকানায়।

নিজের রেকর্ডের জন্য সকল নথির কপি রাখতে হবে।

ধাপ ৩: আবেদন পর্যালোচনা প্রক্রিয়া

ডিজিডিএ আবেদন পর্যালোচনা করবে এবং নিম্নলিখিতগুলি মূল্যায়ন করবে:

  • ওষুধের প্রয়োজনীয়তার চিকিৎসাগত বিবেচনা।
  • প্রদানকৃত নথির সত্যতা।
  • প্রয়োজন হলে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ।

ধাপ ৪: আমদানির অনুমতি প্রদান

আবেদন অনুমোদিত হলে, ডিজিডিএ একটি আমদানির অনুমতি প্রদান করবে যেখানে ওষুধের বিস্তারিত তথ্য এবং অনুমোদিত পরিমাণ উল্লেখ থাকবে।

আমদানির প্রক্রিয়া

ওষুধের শিপমেন্ট ব্যবস্থা

আবেদনকারী একটি লাইসেন্সধারী বিদেশী সরবরাহকারীর সাথে যোগাযোগ করে শিপমেন্টের ব্যবস্থা করতে পারেন। নিশ্চিত করতে হবে যে সরবরাহকারী সেই দেশের সকল রপ্তানি নিয়ম মেনে চলছে।

বাংলাদেশে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স

ওষুধ দেশে পৌঁছানোর পর নিম্নলিখিত নথি কাস্টমস কর্মকর্তাদের প্রদান করতে হবে:

  • ডিজিডিএ-র আমদানির অনুমতি।
  • মূল প্রেসক্রিপশন ও চিকিৎসা প্রতিবেদন।
  • শিপমেন্টের নথি।
  • সরবরাহকারীর ইনভয়েস।

কাস্টমস কর্মকর্তারা নথি যাচাই করবেন এবং প্রয়োজন হলে প্যাকেজ পরিদর্শন করবেন।

আবেদনকারীর দায়িত্ব

আবেদনকারী দায়বদ্ধ হবেন:

  • প্রদানকৃত সকল তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা।
  • সকল নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তা মেনে চলা।
  • ভবিষ্যতের জন্য আমদানির রেকর্ড রাখা।

নিষিদ্ধ পদার্থ ও সীমাবদ্ধতা

কিছু পদার্থ নিষিদ্ধ বা অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণের অধীন হতে পারে। ওষুধটি কোনো নিয়ন্ত্রিত পদার্থের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করতে ডিজিডিএ-র সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন।

নিয়ম লঙ্ঘনের আইনি প্রভাব

অনুমোদন ছাড়া অনুমোদনহীন ওষুধ আমদানি করা আইনের লঙ্ঘন। এর জন্য শাস্তি হতে পারে:

  • ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা।
  • জরিমানা।
  • আইনি পদক্ষেপ, গুরুতর ক্ষেত্রে কারাদণ্ড।

আইনি প্রভাব এড়াতে নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।

সহায়তা ও পরামর্শ

ডিজিডিএ-র সাথে যোগাযোগ

আবেদন প্রক্রিয়া বা নিয়ম সম্পর্কে আরও জানতে যোগাযোগ করুন:

মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর
ঔষধ ভবন, মহাখালী, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
ফোন: +৮৮০-২-৯৮৮০৮০৩, +৮৮০-২-৯৮৮০৮৬৪
ইমেল: [email protected]
ওয়েবসাইট: www.dgda.gov.bd

চিকিৎসা পেশাজীবীদের সাথে পরামর্শ

অভিজ্ঞ চিকিৎসা পেশাজীবীদের সাথে পরামর্শ করা ভালো যারা এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞাত। তারা নথিপত্র সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারবেন।

উপসংহার

১৯৮২ সালের ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ অনুযায়ী, অনুমোদনহীন বা অনুপস্থিত জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আমদানি করতে হলে নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। সঠিকভাবে নিয়ম মেনে চলা ও প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের মাধ্যমে আমদানি প্রক্রিয়া সফল করা সম্ভব। তাই, স্বাস্থ্যসেবা পেশাজীবী ও ডিজিডিএ-এর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা আবশ্যক।

তথ্যসূত্র

English version

[English version content as provided above]
US United States 1